(Illustration by Boris Pelcer for The New Yorker)
দুনিয়াজাত : সালমান রুশদী
“Wherever they burn books, in the end will also burn human beings.” – Heinrich Heine
(দ্য নিউ ইয়র্কার ম্যাগাজিনের জুন ১, ২০১৫ সংখ্যায় প্রকাশিত এই গল্পটি সালমান রুশদীর সাম্প্রতিক উপন্যাস, Two years eight months and twenty eight nights এর প্রথম অধ্যায়টি, যা The Duniyazat নামে প্রকাশিত হয়েছিল, এটি সেই অংশটির অনুবাদ প্রচেষ্টা- কাজী মাহবুব হাসান)
১১৯৫ খ্রিস্টাব্দে, মহান দার্শনিক ইব্ন রুশদ (১), সেভিয়ার (২) এক সময়কার বিচারক, আর খুব সাম্প্রতিক সময়ে তার নিজের জন্ম শহর কর্দোবায় (৩) খলিফা আবু ইয়ুসুফ ইয়াকুবের (৪) ব্যক্তিগত চিকিৎসক, তাঁর উদারনীতিবাদী ধারণাগুলোর কারণে আনুষ্ঠানিকভাবে নিন্দিত এবং অপমানিত হয়েছিলেন, ক্রমশ শক্তিশালী হয়ে উঠতে থাকা বারবার (৫) ধর্মান্ধদের কাছে যে ধারণাগুলো অগ্রহনযোগ্য ছিল, আর যারা সেই সময় মহামারীর মত ছড়িয়ে পড়েছিল আরব স্পেনে (৬)।
এবং তাঁকে অভ্যন্তরীণ নির্বাসনে বাস করার জন্য পাঠানো হয়েছিল লুসেনায় (৭) ছোট একটি গ্রামে। সেই গ্রামটি ছিল ইহুদী ঘণবসতিপূর্ণ একটি গ্রাম, যে গ্রামের ইহুদীরা আর কখনোই বলতে পারবেন না যে তারা ইহুদী ছিলেন, কারণ তাদের সবাইকে ইসলাম ধর্ম গ্রহন করার জন্য বাধ্য করা হয়েছিল। ইবন রুশদ, একজন দার্শনিক, যার কিনা নিজের দর্শন ব্যাখ্যা ও প্রচার করার আর কোনো অনুমতি ছিল না, যার সব লেখাই নিষিদ্ধ আর সব পাণ্ডুলিপি পুড়িয়ে ফেলা হয়েছিল, তাৎক্ষনিকভাবেই বেশ স্বাচ্ছন্দ অনুভব করেছিলেন লুসেনার সেই ইহুদীদের সংস্পর্শে এসে, যে ইহুদীরা আর কখনো বলতে পারবে না যে তারা একসময় ইহুদী ছিলেন। বর্তমান শাসক রাজবংশ, আল-মোহাদ এর খলিফার একজন প্রিয় ভাজন ছিলেন তিনি, কিন্তু প্রিয়রা সব সময় প্রিয় থাকে না, এছাড়া খলিফা আবু ইউসুফ ইয়াকুবও ধর্মান্ধদের অনুমতি দিয়েছিলেন অ্যারিস্টোটলের এই মহান ভাষ্যকারকে তাঁর জন্ম শহর থেকে বিতাড়িত করতে।