The Unbearable Lightness of Being by Milan Kundera,
লেখক: মিলান কুন্ডেরা
অনুবাদ: কাজী মাহবুব হাসান
প্রচ্ছদে ব্যবহৃত শিল্পকর্ম: শিল্পী আসমা সুলতানা
গ্রাফিক্স: সজল চৌধুরী
প্রকাশক: এ এইচ লিহন
প্রকাশনী: Hyperspace
বইটি এখান থেকে ডাউনলোড করুন:

The Unbearable Lightness of Being by Milan Kundera,
লেখক: মিলান কুন্ডেরা
অনুবাদ: কাজী মাহবুব হাসান
প্রচ্ছদে ব্যবহৃত শিল্পকর্ম: শিল্পী আসমা সুলতানা
গ্রাফিক্স: সজল চৌধুরী
প্রকাশক: এ এইচ লিহন
প্রকাশনী: Hyperspace
বইটি এখান থেকে ডাউনলোড করুন:
The Magic of Reality: How We Know What’s Really True : Richard Dawkins
অনুবাদক: কাজী মাহবুব হাসান
লেখক: রিচার্ড ডকিন্স
প্রচ্ছদ: সজল চৌধুরী
প্রকাশক: এ এইচ লিহন
প্রকাশনী: Hyperspace
মূল: রেবেকা বাক্সটন ও লিসা হোয়াইটিং -এর দ্য ফিলোসফার্স কুইন এবং অনুবাদকের নির্বাচিত কয়েকটি প্রবন্ধ
ভূমিকা থেকে ..
When I pronounce the word Future,
the first syllable already belongs to the past.
When I pronounce the word Silence, I destroy it.
When I pronounce the word Nothing,
I make something no nonbeing can hold.’
(Wisława Szymborska, ‘The Three Oddest Words’)
দর্শন ও ধারণার ইতিহাসে উপেক্ষিত কয়েকজন নারী দার্শনিকদের খানিকটা পরিচয় করিয়ে দেয়াই হচ্ছে এই বইটির মূল উদ্দেশ্য। বহুভাবেই এই বইটি আমার অনূদিত ‘দর্শনের সহজপাঠ’ ( ২০১৯, দিব্য প্রকাশ) বইটিরই সীমিত একটি সম্প্রসারণ। এই বইটি মূলত দুইজন তরুণ এবং নারী দার্শনিক, রেবেকা বাক্সটন এবং লিসা হোয়াইটিং – এর সম্পাদিত “দ্য ফিলোসফার কুইনস” বইটির ভাষান্তর (২০২০, আনবাউন্ড, লন্ডন)। তবে মূল বইয়ে অন্তর্ভুক্ত বিশটি অধ্যায়ের সাথে আমি নিজের বাছাই করা বাড়তি নয়টি অধ্যায় যুক্ত করেছি, যে অধ্যায়গুলো আরো কয়েকজন গুরুত্বপূর্ণ নারী দার্শনিক এবং সার্বিকভাবে দর্শনের নারীদের অবদানসংক্রান্ত সাধারণ বিষয়গুলো নিয়ে আলোচনা করেছে। স্পষ্টতই এখানে অন্তর্ভুক্ত হয়নি এমন নারী দার্শনিকদের তালিকা আরো অনেক দীর্ঘ। এই বইয়ের শেষে তাদের নামের একটি সংক্ষিপ্ত তালিকা যুক্ত করা হয়েছে, আগ্রহীরা নিজ উদ্যোগে তাদের সম্বন্ধে চাইলে জানতে পারবেন। আবারো মনে রাখা দরকার এই বইটি দর্শনের পাঠ্যপুস্তক নয়। আমার নিজের আগ্রহের ক্ষেত্র, ধারণা ইতিহাস নিয়ে সহজপাঠ্য কোনো বই অনুবাদ করাই ছিল আমার উদ্দেশ্য। আশাকরি বইটি পাঠকদের ভালো লাগবে।
কাজী মাহবুব হাসান
টরন্টো, মার্চ ২০২২
প্রচ্ছদ: Asma Sultana Mita
প্রকাশনা: Dibya Prakash (২০২৩)
A Little History of Art by Charlotte Mullins
অনুবাদ: কাজী মাহবুব হাসান ও Asma Sultana Mita
প্রচ্ছদ: শোভে গুহার একটি আলোকচিত্র অবলম্বনে।
প্রকাশনা: Dibya Prakash (২০২৩)
“Great nations write their autobiographies in three manuscripts, the book of their deeds, the book of their words and the book of their art. Not one of these books can be understood unless we read the two others, but of the three the only trustworthy one is the last.” ~John Ruskin
আকারে বড় হলেও এটি শিল্পকলার একটি সংক্ষিপ্ত ইতিহাস। সাধারণ কৌতূহলী পাঠকদের জন্য লেখা বইটি এই বিষয়ে জানতে আগ্রহী যে-কারোর উপকারেই আসবে। বইটির মোট চল্লিশটি স্বতন্ত্র অধ্যায়ে লেখক গুহার অন্ধকারে দেয়ালে আঁচড় থেকে শুরু করে একবিংশ শতকে সমাজ পরিবর্তনের হাতিয়ারে রূপান্তরিত হওয়া শিল্পকলার বিবর্তনের ইতিহাস বর্ণনা করেছেন। বইটি ব্যতিক্রম কারণ এখানে শিল্পকলার ইতিহাসকে আরো সম্প্রসারণ করা হয়েছে, অন্তর্ভুক্ত হয়েছে বহু শিল্পী ও সংস্কৃতি, প্রথাগত শিল্পকলার বইয়ে সাধারণত যা উপেক্ষা করা হয়েছে। প্রতিটি অধ্যায়ে আমরা ছবি যুক্ত করেছি, যদিও সেগুলো পূর্ণাঙ্গ এবং রঙ্গীন চিত্র নয়, তবে অধ্যায়ের শেষে ব্যবহৃত ছবির একটি তালিকা যুক্ত করা হয়েছে, আগ্রহীরা ইন্টারনেটে সেই চিত্রগুলো দেখে নিতে পারেন। শিল্পকলার ইতিহাস নানা কারণেই গুরুত্বপূর্ণ কারণ এটি সভ্যতারও ইতিহাস। মানব মনের সৃজনশীলতা আমাদের সামাজিক বিবর্তনে গুরুত্বপূর্ণ একটি চালিকা শক্তি – আর শিল্পকলা এর শুদ্ধতম একটি রূপ। ইতিহাসের এই অভিযাত্রায় আপনাকে স্বাগতম।
See less
“Homo sapiens is a strange animal. Our ancestors first lived in trees, then came down to explore the ground. Then they became bipeds and eventually explored the world—from there, possibilities were endless. This changing behavior is one of the greatest enigmas there is, but we are in the process of unraveling it, with the help of amazing recent advancements in prehistoric sciences.“
– Silvana Condemi, François Savatier, A Pocket History of Human Evolution. How We Became Sapiens.
মানব বিবর্তন নিয়ে লেখা এটি খুবই সংক্ষিপ্ত একটি বইয়ের অনুবাদ। ফরাসি প্রত্ননৃতাত্ত্বিক সিলভানা কনডেমি ও বিজ্ঞান সাংবাদিক ফ্রাঁসোয়া সাভাটিয়ের মানব বিবর্তনের হালনাগাদ তবে খুবই সংক্ষিপ্ত একটি রূপরেখা উপস্থাপন করেছেন এই বইটিতে। মানব বিবর্তন নিয়ে যারা জানতে আগ্রহী তাদের জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রাইমার হিসেবে কাজ করবে। মানব বিবর্তন খুবই দ্রুত পরিবর্তনশীল অনুসন্ধানের ক্ষেত্র কিন্তু কিছু কিছু বিষয়ে ঐক্যমত প্রতিষ্ঠা হয়েছে, আর এই বইটি চমৎকারভাবে সেগুলো উপস্থাপন করেছে। প্রাগিতিহাসের তথ্য বেশ দ্রুত বদলে যাচ্ছে, বিশেষ জিনগত বিশ্লেষণ আর সময় নির্ণয় করার কৌশলে অভাবনীয় অগ্রগতির কল্যাণে। আমরা এখন আমাদের প্রাচীন আত্মীয়দের সম্বন্ধে অনেক বেশি কিছু জানি। এই বইতে আমরা হোমো ইরেকটাস আর এরগ্যাস্টার, নিয়ানডার্থাল আর ডেনিসোভান ও অন্যদের সম্বন্ধে অনেক হালনাগাদ তথ্য পাব ( এখন আমরা জানি যতটুকু ভাবা হতো তারচেয়ে বেশি সংকর প্রজনন ঘটেছিল)। জনপ্রিয় ইতিহাসবিদ ইউভাল নোয়া হারারির তথাকথিত কগনিটিভ বিল্পবের ধারণাটিকে প্রশ্নবিদ্ধ করা নৃতাত্ত্বিক বিশ্লেষণগুলো বিবেচনা করেছে বেশ কিছু প্রশ্ন: হোমিনিন প্রজাতিগুলোর মধ্যে আমরা অর্থাৎ সেপিয়েন্সের বিবর্তন ত্বরান্বিত করেছিল কোন বিষয়গুলো – এটি কি তাদের সৃষ্ট হাতিয়ার, আমাদের ‘বড়’ মস্তিষ্ক, ভাষা, সহমর্মিতা নাকি এমন কিছু যা সম্পূর্ণ ভিন্ন? আদি দ্বিপদী মানব প্রজাতিগুলোর মধ্যে শুধুমাত্র কেন আমরা একাই বেঁচে আছি? তাদের উপসংহারগুলো উন্মোচন করেছে সেই বিচিত্র উপায়গুলো যেভাবে প্রাচীন মানুষ আজও বেঁচে আছে – আধুনিক ‘গ্রুমিং’ হিসাবে গল্পগুজব থেকে শুরু করে শ্রমের লিঙ্গভিত্তিক বিভাজন, এবং আমাদের এই অদ্ভুত আর অনন্য প্রজাতির ভবিষ্যতই বা কি – দ্রুত বাড়তে থাকা জনসংখ্যার এই সামাজিক প্রাণিটি? এমনকি নতুন করে ‘মানব পা’ মূল্যায়ন করার বিষয়টিও অনুপ্রাণিত করতে পারে।
অনুবাদ: কাজী মাহবুব হাসান
প্রকাশনা: Dibya Prakash (২০২৩)
মনু এস. পিল্লাই-এর একটি প্রবন্ধ অবলম্বনে
তার নাম ছিল নাঙ্গেলি এবং তিনি চেরথালায় বাস করতেন, কেরাল উপকূলের উপকূলের পানি পরিবেষ্টিত একটি বর্ধিতাংশ। আমাদের জানা নেই তিনি কবে জন্ম গ্রহন করেছিলেন অথবা কে তাকে জন্ম দিয়েছিল। বলা হয়ে থাকে তিনি উনবিংশ শতকের প্রথম দিকে মারা গিয়েছিলেন, এবং তার মৃত্যুর পর অতিক্রান্ত দুই শত গ্রীষ্মে শতাধিক ভিন্ন ছাঁচে তার আত্মার পূনর্জন্ম হয়েছে। ইন্টারনেটে আজ নাঙ্গেলির বহু সমর্থক আছেন, তার গল্প বলছেন সেই নারী পুরুষরা যারা তাদের বর্তমান এই সময়ে অনুপ্রেরণা আর সাহস খুঁজছেন। এবং তারাও নাঙ্গেলির বিসর্জনকে নতুন ছাঁচে উপস্থাপন করেছেন, এমন একটি কাহিনি সৃষ্টি করেছেন, যা এর মূল চরিত্র নাঙ্গেলির কাছেই অবোধ্য মনে হতো। নাঙ্গেলি সমাজের হৃৎপিণ্ডে ছুরিকাঘাত করা একজন নারী থেকে এমন একজন নারীতে রূপান্তরিত হয়েছেন, যিনি ঔসব ধূর্ত প্রতারণাপূর্ণ শৃঙ্খলের জন্য প্রাণ দিয়েছিল, যাকে আমরা অনেকেই ‘অনার’ বা সন্মান হিসেবে চিনি।
এই কাহিনির রূপরেখা সুপরিচিত। নাঙ্গেলি ও তার পুরুষ, চিরুকন্দন ছিলে ‘এজহাভা’ – যারা মূলত ‘টডি ট্যাপার’ অর্থাৎ নারিকেল বা তালগাছের ফুল থেকে যারা নির্যাস সংগ্রহ করেন, পরে সেটিকে ‘টডি’ নামে মৃদু অ্যালোকোহল পানীয় তৈরি করা হয়।। এজহাভা সমাজের সেই অস্বস্তিকর শূন্যস্থানে পরিশ্রম করে বাঁচেন, সমাজ যাদের শ্রেনীভূক্ত করে নিচু জাত হিসেবে, তবে সবচেয়ে নিচু জাত নয়। তাদের ছোট একটি কুটির ছিল যেখানে তারা বাস করতেন, এবং তাদের কোনো সন্তান ছিল না। নাঙ্গেলি ও চিরুকন্দনের জন্য জীবন তাদের যে-কোনো প্রতিবেশির মত কঠোর আর নির্মম ছিল। তারা দিনে এনে দিনে খেতেন, জাতপ্রথার বেধে দেয়া নিয়ম মেনে চলতেন, সমাজের উচু জাতের মানুষদের অহংকারের প্রতি নতজানু হতেন। নাঙ্গেলি প্রতিবাদ করার আগ পর্যন্ত তাদের কোনো কিছুই বিশেষভাবে লক্ষণীয় ছিল না। সমাজের মুরুব্বীরা দাবী করেছিলেন যে, নাঙ্গেলি তার সন্মান রক্ষার্থে এই প্রতিবাদী অবস্থান নিয়েছিল, কিন্তু এমন কিছু বলার কারণ ছিল তারা সেই সত্যটি স্বীকার করতে আতঙ্কিত হয়েছিলেন – নাঙ্গেলি আসলে তাদের বিরুদ্ধে দাড়িয়েছিলেন। নাঙ্গেলি বিদ্রোহী ছিলেন, এবং বহু বিদ্রোহীর মতোই মৃত্যুতে তার স্মৃতি তিনি যাদের বিরোধিতা করেছিলেন তাদের সম্পত্তিতে পরিণত হয়েছে। তিনি নিপীড়কদের বিরুদ্ধে দাড়িয়েছিলেন ঠিকই, কিন্তু তার ঐতিহ্য এখন অন্য নিপীড়কদের হাতের মুঠোয়।
যে কেরালা নাঙ্গেলি আর চিরুকন্দন জানতেন সেটি আজকের আধুনিক কেরালা নয়। এর স্বাস্থবান শিশু, স্বাধীন পিতামহী-মাতামহী আর শিক্ষিত জনগণের জন্য যে কেরালা নিয়ে উচ্ছাস করা হয় এটি সেই কেরালা নয় । এটি ছিল কঠোর, নিষ্ঠুর একটি এলাকা, আর ত্রিবাঙ্কুর (ট্রাভাংকোর) মানচিত্রে চেরথালা ছিল ক্ষুদ্র একটি বিন্দু – যে রাজ্যটির একজন স্বাধীন রাজা ছিলেন। যে রাজার প্রতি তারা কর আর আনুগত্যের প্রতিশ্রুতে আবদ্ধ ছিলেন। ভূমির কর ছিল কম, কিন্তু রাজারা তাদের পূর্বসূরিদের এই ভুল শোধরানোর চেষ্টা করেছিল বিচিত্র ধরনের রাজস্ব আরোপ করে। যদি আপনি ভূমিহীন মৎসজীবী হয়ে থাকেন, তাহলে আপনার মাছ ধরার জালের ওপর আপনাকে কর দিতে হবে। আপনি যদি পুরুষ হন, এবং গোফ রাখতে পছন্দ করেন, তাহলে কর আদায়ের জন্য সেটি কর পরিদর্শকের এখতিয়ারের মধ্যে থাকবে। যদি আপনার দাস থাকে, তাহলে আপনাকে ঔসব জীবন্ত রক্তমাংসের জন্য কর দিতে হবে। নাঙ্গেলি ও পুরুষ চিরুকন্দন অনুগত প্রজার মতো রাজ্যে নিয়ম মেনে নিয়েছিলেন। কিন্তু বর্তমানে যারা এই গল্পটি বলছেন তারা আপনাকে বলবেন যে তিনি একটি ঘৃণ্য করের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করেছিলেন যা কিনা তার ‘সন্মানের’ সেই নাজুক বিষয়টিকে স্পর্শ করেছিল। আত্মমর্যাদা আছে এমন কোনো নারীর মতো যখনই এটি তার অধিকারের ওপর হস্তক্ষেপ করেছে, তিনি ঘোষণা করেছিলেন – ‘আর নয়’।
২০১৩ সালের ১২ ফেব্রুয়ারী চার্লস ডারউইনের জন্মদিনে ধারাবাহিকভাবে এই লেখাটি শুরু করেছিলাম নিজস্ব ব্লগে (জীবনের বিজ্ঞান) প্রকাশ করার ইচ্ছা নিয়ে। ইবুকটি সেই লেখাটির পরিবর্ধিত আর সম্পাদিত একটি রুপ। চার্লস ডারউইন ১৮০৯ সালে ১২ ফেব্রুয়ারী ইংল্যান্ডে জন্মগ্রহন করেছিলেন। বর্তমানে দিনটি আন্তর্জাতিক ডারউইন দিবস হিসাবে পালন করা হয়। বিজ্ঞান এবং যুক্তির আলোয় কুসংস্কারমুক্ত জীবন উদযাপনের দিন হিসাবে চার্লস ডারউইনের জন্মদিন, ১২ ফেব্রুয়ারীকে নব্বই দশকের শুরুতে,আন্তর্জাতিক ডারউইন দিবস হিসাবে বেছে নেয়া হয়েছিল । প্রতিভাবান ব্রিটিশ প্রকৃতি বিজ্ঞানী চার্লস ডারউইন মানব সভ্যতার ইতিহাসে সম্ভবত সবচেয়ে শক্তিশালী আর বৈপ্লবিক ধারণাটির জন্ম দিয়েছিলেন: প্রাকৃতিক নির্বাচনের মাধ্যমে বিবর্তন। জীববিজ্ঞান তো বটেই বিজ্ঞানের নানা শাখায় এর প্রভাব সুদূরপ্রসারী। ১৮৫৯ সালে প্রকাশিত তার মাষ্টারপিস ‘অন দি অরিজিন অব স্পিসিস’ (নামটি সম্পাদিত সংক্ষেপিত একটি রুপ, On the Origin of Species) বইটি, পৃথিবী এবং সেখানে আমাদের নিজেদের অবস্থান সম্বন্ধে আমাদের দৃষ্টিভঙ্গিটিকে চিরকালের মত বদলে দিয়েছিল। খুব সরল এই ধারণার মাধ্যমে, ডারউইন জীবের সকল জটিলতা আর বৈচিত্র্যের একটি সাধারণ ব্যাখ্যা দিতে পেরেছিলেন ।গত দেড় শতাব্দী ধরে বিজ্ঞানের বিভিন্ন শাখা তার এই ধারণাটির সপক্ষে প্রমাণ জুগিয়েছে, যা এখনও অব্যাহত আছে। বিবর্তন তত্ত্বের বিরোধীতার কারণ কখনোই এর প্রমাণের স্বল্পতা নয়, বরং এর সম্বন্ধে অজ্ঞতা। ডারউইনকে নিয়ে ধারাবাহিক এই লেখাটি কিছুটা সংক্ষিপ্ত আকারে ডারউইনের জীবনে সেই গুরুত্বপুর্ণ সময়ে কাহিনী। লেখাটির মূল সূত্র কার্ল জিমারের (Carl Zimmer) এর Evolution, the triumph of an idea র কিছু অধ্যায়, তবে বেশ কিছু বাড়তি তথ্য এসেছে বিভিন্ন সূত্র থেকে।
কাজী মাহবুব হাসান
প্রকাশক : হাইপারস্পেস
Siddhartha Mukherjee’s THE GENE: An Intimate History
অনুবাদ: কাজী মাহবুব হাসান
প্রচ্ছদ: এম সি এশারের বন্ড অব ইউনিটি অবলম্বনে আসমা সুলতানা
প্রকাশনা: দিব্য প্রকাশ
আপনি যখন আয়নার দিকে তাকান, আপনি শুধু আপনার মুখই দেখেন না, একটি জাদুঘরও দেখেন, নৃতাত্ত্বিক ডেভিড অ্যান্থনি আমাদের স্মরণ করিয়ে দিয়েছিলেন, যদিও একটি অর্থে এটি আপনারই মুখ, কিন্তু বহু বৈশিষ্ট্যের কোলাজ হিসেবে এটি তৈরি, যে বৈশিষ্ট্যগুলো আপনি আপনার পূর্বসূরিদের কাছ থেকে পেয়েছেন। ঐ যে ঠোঁট আর চোখ যা আপনার প্রিয় বা আপনাকে বিব্রত করে সেটি শুধু আপনার একার নয়, এটি আপনার পূর্বসূরিদেরও বৈশিষ্ট্য। আজ যদিও তাদের অস্তিত্ব নেই, কিন্তু খণ্ডাংশ রূপে আপনার মধ্যে তারা এখনো খুবই জীবন্ত। এমনকি জটিল বৈশিষ্ট্যগুলো, যেমন, ভারসাম্য রক্ষার ক্ষমতা, সঙ্গীত সৃষ্টি, কিংবা ভীড়ে লজ্জা পাওয়া, কিংবা কোনো অসুখে আক্রান্ত হবার বাড়তি প্রবণতা – এইসব বৈশিষ্ট্যই আপনার পূর্বসূরিদের মধ্যে কারো-না-কারো ছিল। শুধু আমাদের শরীর নয়, আমরা সারাক্ষণই আমাদের অতীত নিয়ে ঘুরি, আর আমাদের সামাজিক আচারে এটি টিকে আছে, এমনকি আমাদের বাচনভঙ্গিতে। অতীত হচ্ছে একগুচ্ছ অদৃশ্য চশমা, যা আমরা সারাক্ষণই পরে আছি, যার মধ্যে আমরা পৃথিবীকে দেখছি আর পৃথিবীও আমাদের দেখছে। নিচের দিকে তাকিয়ে তাদের অস্তিত্ব স্বীকার করি বা না করি, আমরা সবসময়ই আমাদের পূর্বসূরিদের কাধে ওপর দাড়িয়ে আছি।
Continue reading “সিদ্ধার্থ মুখার্জির জিন: একটি অন্তরঙ্গ ইতিহাস”Why Evolution Is True by Jerry A. Coyne
অনুবাদক: কাজী মাহবুব হাসান
লেখক: জেরি কয়েন
প্রচ্ছদ: সজল চৌধুরী
প্রকাশক: এ এইচ লিহন
প্রকাশনী: Hyperspace
রিচার্ড ডকিন্সের সেলফিশ জিন বিশ্বের সবচেয়ে প্রভাবশালী বইগুলোর একটি। মাল্টি-মিলিয়ন কপি বেস্ট সেলার বই এটি। কিন্তু এ বইটিকে বেশিরভাগ মানুষই নিরবিচ্ছিন্নভাবে ভুল বুঝেছে!বাংলাদেশে এই মিস-আন্ডারেস্টেন্ডিং ব্যাপক! বিশেষ করে জেনেটিক্যাল স্বার্থপরতা বিষয়টি বেশিরভাগ মানুষই ঠিকঠাক বুঝে উঠতে পারেনি। তারা স্বার্থপরতা শব্দটিকে নিয়েছিল আক্ষরিকার্থে। যৌক্তিক ও গাণিতিক দৃষ্টিকোণ থেকে নয়। তারা এ স্বার্থপরতাকে দেখেছিলেন বায়োলজিক্যাল দেহের স্বার্থপরতা হিসেবে জিনের স্বার্থপরতা হিসেবে নয়।
ক্যানিভাল মাকড়সা যখন সেক্স করে তখন স্ত্রী মাকড়সা এক কামড়ে তার মাথাটি খেয়ে ফেলে। জিন তাকে প্রেমিকার খাদ্যে পরিণত হওয়ার জন্য এভাবেই প্রোগ্রাম করেছে। ক্যানিভালের দেহ ও মন কোনোটাই জিনের কাছে গুরুত্বপূর্ণ নয়! কিন্তু কেন? কারণ সন্তান গর্ভে থাকাকালীন স্ত্রীর পক্ষে যথাযথ নিউট্র্যাশন যোগাড় করা সম্ভব নয়। আর যদি সন্তানের মৃত্যু হয় তবে তার জিন ফিউচারে প্রবেশ করতে পারবে না। এজন্য স্বার্থপর জিন পুরুষ কেনিভালকে এমনভাবে প্রোগ্রাম করেছে যেন সে মৃত্যু নিশ্চিত জেনেও সেক্সের মাধ্যমে সন্তান উৎপাদন করে! সন্তানের লালন-পালনের জন্য মায়ের জীবন পিতার থেকে গুরুত্বপূর্ণ আর তাই সে তার প্রেমিকাকে ভবিষ্যৎ জিনের জন্য একা রেখে হারিয়ে যায়!
এই দৃশ্যকল্পে, স্বার্থপর জিন যে পদ্ধতিতে নিজের ভবিষ্যতের জন্য পুরুষ কেনিভালকে হত্যা করেছে ঠিক একই পদ্ধতিতে সামগ্রিক মানব সভ্যতার ভবিষ্যতের জন্য সে নিউটন ও আইনস্টাইনকেও হত্যা করে। পৃথিবীর বেশিরভাগ শিল্পি, বিজ্ঞানী এবং ক্রিয়েটিভ পারসনরা মানসিক রোগাক্রান্ত হয়। কেউ সিজোফ্রেনিয়া আক্রান্ত তো, কেউ অটিজম এসপার্গার ডিজিজে আক্রান্ত। তারা পরিবারের সাথে সংযুক্ত হতে পারে না, তারা সমাজিক ইমোশনের সাথে সংযুক্ত হতে পারে না, তারা বর্তমান জীবনের প্রয়োজনীয়তার সাথে সংযুক্ত হতে পারে না। কারণ তাদের মস্তিষ্কে সেন্স অভ প্রেজেন্টের সাথে সম্পৃক্ত ব্রেইন সার্কিট স্বার্থপর জিন দূর্বল করে দেয়( Here and Now Circuit)।
তারা মানুষের সাথে ইমোশনাল বন্ধন তৈরি করতে পারে না। তাদের ব্রেইন সবসময় সেন্স অভ ফিউচারের ভেতর ডুবে থাকে( Future Anticipation Circuit)। তারা ইউনিভার্সের ফিউচার নিয়ে ভাবে, ভাবে মহাবিশ্বের শেষ তিন মিনিট নিয়ে কিন্তু তারা এই মুহূর্তে তাদের সামনে অবস্থানরত নিজের ফ্যামলি ও ফ্রেন্ডের কথা ভাবে না! এ পদ্ধতিতে স্বার্থপর জিন কেনিভাল মাকড়সার মতো জিনিয়াসদের ব্রেইনকে মানব সভ্যতার ভবিষ্যতের জন্য হত্যা করে! এজন্য আইনস্টাইন বলেছিলেন, আমি হিউম্যানিটিকে ভালোবাসি, হিউম্যানকে নয়! আলফ্রেড নোবেল বলেছিলেন, “আমি একজন মিসেন্থোপ। আমি মানবতার সেবা করার স্বপ্ন দেখি কিন্তু আমি একজন মানুষের সাথে দু-দিনের বেশি টিকতে পারব না! মানুষ যতই কাছে আসে তাদের প্রতি আমি ততই বিরূপ হয়ে উঠি!” এভাবে এডনা সেন্ট ভিনসেন্ট, ফিওদর দস্তয়েভস্কি, চার্লস শুলজ অথবা পল ডিরাক এদের প্রত্যেকেই একই কথার পুনরাবৃত্তি করেছিলেন!ন্যাশনাল একাডেমি অভ সায়েন্স, রয়েল সোসাইটির সদস্য এবং টপ লেভেলের নোবেল প্রাইজ উইনারদের মধ্যে আমরা এই প্রবণতা দেখতে পাই।( বিস্তারিত আমার বই “ডোপামিন: দ্যা মলিকিউল অভ মোরে পাবেন)
আইনস্টাইন যে শুধু সামাজিক যোগাযোগের ক্ষেত্রে দূর্বল ছিলেন তাই নয়। তিনি কখনোই একজন প্রেমিকার মধ্যে সীমাবদ্ধ ছিলেন না। কারণ যাদের মস্তিষ্কে সবসময় সেন্স অভ ফিউচার কাজ করে তাদের মস্তিষ্ক ডোপামিন ড্রাইভ, আর ডোপামিন তাদেরকে এক প্রেমিকার উপর সন্তুষ্ট হতে দেয় না। ডোপামিন সব সময় তাকে অবাস্তব, অসম্ভব ও অজানা বাস্তবতার দিকে চালিত করে, তারা বাস করে সেখানে যা নেই আর এভাবেই ডোপামিন তাদের মস্তিষ্কে বর্তমান অর্জনের প্রতি অসন্তোষ তৈরি করে, ভয়াবহ দুঃখ, যন্ত্রণা আর একাকীত্ব দিয়ে নতুন নতুন সৃষ্টিশীলতার উদ্ভব ঘটায়, তাদের ব্রেইন থেকে বেরিয়ে আসে বাস, ট্রাক, বিমান, রকেট ও কম্পিউটার! যে ডোপামিন আইনস্টাইনের ব্রেন থেকে পদার্থবিদ্যার সমীকরণ বের করেছিল , ব্ল্যাকহোল, ওয়ার্মহোল, হোয়াইটহোল ও বিগব্যাং বের করেছিল, একই ডোপামিন আইনস্টাইনকে বের করে দিয়েছিল পারিবারিক সুখ, শান্তি ও সামাজিক বন্ধন থেকে, তিনি সারাজীবন ছিলেন সিঙ্গুলারিটি পয়েন্টের মতোই একা ! যে ডোপামিন আইনস্টাইনের এক সন্তানকে ইন্টারন্যাশনাল হাইড্রোলিক ইঞ্জিনিয়ারে পরিণত করেছিল, একই ডোপামিনের প্রভাবে আইনস্টাইনের এক সন্তান সিজোফ্রেনিয়া আক্রান্ত অবস্থায় আশ্রমে মৃত্যুবরণ করেছিল। তারা জীবিত থেকেও কেনিভাল মাকড়সার মতোই মৃত ছিলেন! আর সমাজ ও পরিবার তাদের জেনেছিলেন চরিত্রহীন, উদাস, নির্লিপ্ত ও স্বার্থপর হিসেবে! ভেতর ও বাহির কোথাও তারা সুখ খুঁজে পান নি! (সূত্র: ডোপামিন: দ্য মলিকিউল অভ মোর)
সেলফিশ জিন খুবই ভয়াবহ একটি বই! এ বইটি পড়লে আপনি আবেগীয়ভাবে প্রচণ্ড আঘাতপ্রাপ্ত হবেন কিন্তু এই বইটি একটি আশাবাদী বই কারণ এ বইটি আপনাকে শেখাবে কেন দলবদ্ধ হতে হয়, কেন পরার্থপর হতে হয় এবং কেন আমাদের নৈতিক হতে হয়।
ডায়নোসরের জিন সেলফিশ, তার জিন সেলফিশ বলেই মিলিয়ন মিলিয়ন বছর পরও সে আধুনিক পাখির দেহে টিকে আছে! আজ থেকে ৬৫ মিলিয়ন বছর পূর্বের পুরগাতারউসের জিন সেলফিশ, তার জিন এতটাই সেলফিশ যে ৬৫ মিলিয়ন বছর পরও তার উত্তরসূরী আমি টিকে আছি, যে এ মুহূর্তে এ লেখাটি লিখছে! তার জিন যদি সেলফিশ না হত তবে এ মুহূর্তে লিহন অস্তিত্বশীল থাকতে পারত না! মানব সভ্যতা উদ্ভবের পূর্বেই বিলুপ্ত হয়ে যেত ৬৫ মিলিয়ন বছর পূর্বে!
যে স্বার্থপর জিন মানব নামক একটি রোবট তৈরি করে বিশ্বের মিলিয়ন মিলিয়ন জীবকে হত্যা করছে আজ। একই স্বার্থপর জিন আর্কিওপটেরিক্স থেকে ১০,০০০ প্রজাতির পাখির বিবর্তন ঘটিয়েছে পৃথিবীতে! আর্কিওপটেরিক্সের জিন যদি স্বার্থপর না হত তবে আমরা আজ ডায়নোসরের আধুনিক রূপ মুরগির মাংসের গ্রিল খেতে পারতাম না!
এ বইটি জটিল গাণিতিক প্রক্রিয়ার শাব্দিক প্রকাশ! প্যারাডক্স আর থ্রিলে পরিপূর্ণ! এ বই আপনাকে আবেগীয়ভাবে অত্যাচার করার জন্য নয়, আপনার মনকে জীবনের প্রতি ভীতসন্ত্রস্ত করে তোলার জন্যও নয়, এ বইটি আপনাকে শেখাবে কোন পদ্ধতিতে চিন্তা করতে হয়, কোন পদ্ধতিতে চিন্তা করলে জীব বৈচিত্র্য ও জীবদের আচরণ বোঝা সম্ভব! যারা বিবর্তন তত্ত্বকে বুঝতে চান এবং সামগ্রিকভাবে এ বই হল তাদের জন্য চিন্তার সমীকরণ, দ্য থট বাইবেল!
লেখক: রিচার্ড ডকিন্স
অনুবাদক: কাজী মাহবুব হাসান
প্রচ্ছদ: সজল চৌধুরী
প্রকাশক: এ এইচ লিহন
প্রকাশনী: Hyperspace
মূল্য: ৳৫০০